কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ দখল ও অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে। ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান না থাকায় এসব অবৈধ দখল ও নির্মাণ বন্ধসহ বিশ্বখ্যাত পর্যটন স্থানে পরিণত করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে যুগোপযোগী স্ট্যাকচার প্ল্যান, আরবান এরিয়া প্ল্যান ও ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানসহ দুর্যোগ, ঝুঁকি, সংবেদনশীল মাস্টারপ্ল্যান করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। তবে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় চলে আসায় তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় আনা দরকার বলে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতার কারণে পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিত কক্সবাজার ও সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো গড়ে উঠছে। মনোমুগ্ধকর ল্যান্ডস্কেপিং, মসজিদ ও প্যাগোডা, সব মিলিয়ে এটি দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য অন্যতম পর্যটন স্থান। ২০১১ সালে নগর উন্নয়ন অধিদফতর কর্তৃক কক্সবাজার শহর এবং টেকনাফ পর্যন্ত সৈকত এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণীত হয়। কিন্তু ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান না থাকায় অবৈধ দখল এবং অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ইতঃপূর্বে গৃহীত কার্যক্রমগুলোর মধ্যে ইউডিডি কর্তৃক কক্সবাজার পুরনো শহরে সড়ক যোগাযোগের যে নেটওয়ার্ক মাস্টারপ্ল্যানে প্রস্তাব করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে অনেক প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুষ্পষ্ট গাইডলাইন ও পর্যালোচনার মাধ্যমে এ পরিকল্পনা হালনাগাদ করা দরকার। ওই মাস্টারপ্ল্যানে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং সুষ্পষ্ট গাইড লাইন না থাকায় সেটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, মহেশখালী-মাতারবাড়ি প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি কর্তৃক সংশ্লিষ্ট এলাকার ওপর মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলমান আছে। কক্সবাজার এলাকার কয়েকটি পৌরসভার মাস্টারপ্ল্যানও এলজিইডির কাছে প্রস্তুত আছে। তবে এখন শুধু পর্যটন শিল্প কেন্দ্রিক স্থানগুলোর ওপর ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান প্রণয়ন করা যেতে পারে।
মহাপরিকল্পনা তৈরির ব্যাপারে সম্মতি থাকলেও পরিকল্পনা কমিশন বলছে, প্রকল্পের ক্রয় কার্যক্রম অর্থ বিভাগের সার্কুলার অনুযায়ী হতে হবে। এই কাজে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে পারে কিনা সেটি পর্যালোচনা করতে হবে। এ ছাড়া পর্যটন শহর হওয়ার কারণে কক্সবাজারে বৃহদাকার অবকাঠামো নির্মাণ সেখানকার জীবনযাত্রার ধরনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজারের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে আসায় তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় আনা দরকার।
পাঠকের মতামত: